বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ এর সামনেই অবস্থিত সরকারি সুখানপুকুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । এই হাসপাতালকে ঘিরে রয়েছে নানা অভিযোগ। আর এর মধ্যে গুরতর অভিযোগ হাসপাতাল কমপ্লেক্সকে ঘিরে তৈরি হয়েছে মাদকের কেন্দ্রস্থল । 
উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এর উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার হুমায়ুন কবির ইমরানের উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্ধারিত বাস ভবনে থাকার কথা থাকলেও সেখানে তিনি থাকেন না। জানা যায় সেই ভবনে তার পরিবারের আপন মানুষদের থাকতে দেওয়া হয়েছে। তার দ্বায়িত্ব অবহেলা এবং বসবাসকারীদের ছত্রছায়ায় এই মাদক কান্ডের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর গেইট দিনের বেলা খুলে রাখলেও রাতের বেলায় থাকে আরো বেশি উন্মুক্ত ।আর এসবের কারণেই বেড়ে উঠেছে মাদক বানিজ্য সহ মাদক সেবনের আখড়া ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর বাস ভবনের পিছনের সাইটে ভাংগা পড়ে থাকা ৬ থেকে ৭ টি ঘড় পরিত্যক্ত পড়ে রয়েছে। আর এই  ঘড় গুলোতেই মূলতো মাদক বিক্রি এবং সেবন করা হয় । ইয়াবা, ট্যাপেন্ডাডল, গাঁজা সহ অনেক ধরনের মাদকদ্রব্যের চিত্র ।
তবে বিষয়টি নিয়ে সুখানপুকুর উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে তার সরকারি চাকুরিরত অফিসে দেখা করতে গেলে পাওয়া যায়নি হুমায়ুন কবির ইমরানকে। তার চেয়ারে দেখা মেলে অবসর প্রাপ্ত অফিস সহকারী কুদ্দুস (৫০) নামে এক ব্যাক্তিকে।
কুদ্দুস উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এই কাজ করতেন বলে তিনি জানাই  চাকুরি থেকে অবসর নিলে,তার কিছুদিন পরেই হুমায়ুন কবির ইমরান কুদ্দুস কে তার জায়গাতেই বসিয়ে দেন মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতনে। আর তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাশেই খুলে বসেন সোনালী হাসি কমিউনিটি হসপিটাল ও ফাতেমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামক একটি নিজেস্ব প্রতিষ্ঠান।
কুদ্দুস সময়ের কাগজকে বলেন, হুমায়ুন কবির ইমরান এখানে খুব একটা সময় দেন না। বেশিরভাগ সময় তার ক্লিনিকেই দেন ।
এরপর সময়ের কাগজ ইমরানের খোঁজে সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ ষ্টেন্ডে অবস্থিত ফাতেমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পৌঁছায়। কিন্তু এবারও তার সাক্ষাৎ পাওয়া গেলো না। তার বিষয়ে খোজ নেওয়ার জন্য ক্লিনিকে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার যেভাবে চালানোর প্রোয়জন তার কোনটাই নেই চলছে নানা অনিয়মে । দায়িত্বে থাকা নার্স এর নেই কোন শিক্ষা সনদ, শুধু মাত্র ২ বৎসর মেথড এ পড়েই হাতে কাজ শিখে চিকিৎসা দিচ্ছেন ক্লিনিকে।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাও নেই। তার জায়গাতে বসে আছে তারই ভাই। তিনি ট্রেনিং নিচ্ছেন বলে জানান। আবার সামন্য বেতন দিয়ে ১২ ঘন্টার অধিক সময় ধরে ডিউটি করান নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিকে ।
হুমায়ুন কবির ইমরান এর দেখা না পাওয়ায় মুঠোফোনে কল করলে বিষয় গুলো জানতে চাইলে তিনি সময়ের কাগজকে বলেন, আমার ওখানে মাদক বিক্রি এবং সেবন হয় সেটা আমি জানি। তবে আমি কিছু বলতে পারি না।
উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসেন না কেনো এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি ঠিকঠাক মতোই আমার ডিউটি পালন করি। আমার সপ্তাহে ২ দিন গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নাইট ডিউটি করতে হয়। আর নাইট ডিউটি করলে দিনের বেলা সেই ২ দিন আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ বসতে পারিনা।সেই জন্যই আমি কুদ্দুস নামে একটা লোক কে নিজ খরছে সেখানে রেখেছি
বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসার সব জানেন । আপনারা তার সাথে কথা বললেই সব পরিস্কার বুঝতে পারবেন ।
ক্লিনিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ক্লিনিকেকে অদক্ষ্য কোন লোক নেই। সবাই চিকিৎসা বিষয়ে লেখা পড়া কমপ্লিট করেই  সনদের ফটোকপি দেখিয়ে চাকরি করছে ।
উপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ভিতরে মাদক বিক্রি এবং সেবন হয় এই বিষয়টি নিয়ে গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার কাছে এই রকম কোন অভিযোগ নেই, যদিও থানা পুলিশ কঠোরভাবে মাদকের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সুবাধেই আমরা সেই জায়গার মাদক বিক্রি এবং সেবন দুটোর জন্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো ।
উপ সাস্থ্য কেন্দ্রে,অবসর প্রাপ্ত অফিস সহকারী কে দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার বিষয় টি জানতে চাইলে, দ্বায় এরানোর চেষ্টা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা:শারমিনা পারভীন। উপ সাস্থ্য কেন্দ্রের ভিতরে মাদক সেবনের বিষয় টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে, থানা পুলিশ কে অবগত করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
পোস্টটি শেয়ার করুনঃ